সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রয়োজন কঠোর আইন ও বাস্তবায়ন

ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের উদ্যোগে ১০২৫ অতিদরিদ্র পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা ও স্বাস্থ্য সামগ্রী বিতরণ

ঢাকা আহছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টর আয়োজিত করোনা সংলাপ ২৯ তম পর্বে বক্তারা বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রয়োজন কঠোর আইন ও বাস্তবায়ন। আজ শনিবার (১১ জুলাই) সকাল ১১ টায় ঢাকা আহছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদের সঞ্চালনায়” সুরক্ষিত জীবনের জন্য নিরাপদ সড়ক “ শীর্ষক লাইভ আলোচনাটি অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনায় অংশ নেন সাতক্ষীরা -০২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, মহিলা সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান এবং গ্লোবাল রোড সেইফটি এডভোকেসি ও গ্রান্ট প্রোগ্রাম ম্যানেজার তাইফুর রহমান।

অনুষ্ঠানে মূল প্র্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েট এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউট এর সহকারী অধ্যাপক কাজী মো: সাইফুন নেওয়াজ। তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান মতে, বিশ্বে সড়কে প্রতি বছর প্রায় ১.৩ মিলিয়ন মানুষ মারা যায় এবং ২০ থেকে ৫০ মিলিয়ন অ-প্রাণঘাতী জখম থাকে। বিশ্বে যতগুলো কারণে মানুষ মারা যায় তাদের মধ্যে ৮ম কারণ হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনা। তিনি আরোও বলেন, বাংলাদেশে চালক ও পথচারী উভয়ের জন্য কঠোর বিধান যুক্ত করে কার্যকর করা হয়েছে বহুল আলোচিত সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮। তবে, বর্তমান আইনটির এখনও কিছু দূর্বল দিক রয়েছে যার জন্য সড়ক ব্যবহারকারীরা আইন লঙ্ঘন ও দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ চলতি বছরে সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছেন সরকার। গাড়ির গতি নিদিষ্ট করে দেওয়া, চালক ও যাত্রীদের জন্য সিটবেল্ট ব্যবহার বাধ্যতামূলক, মানসম্মত হেলমেটের ব্যবহার, শিশুদের জন্য নিরাপদ আসন নিশ্চিত করা ইত্যাদি সংশোধিত আইনে অন্তর্ভূক্ত করা একান্ত জরুরী।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এমপি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটিয়ে আইনকে মেনে চলতে হবে। তাছাড়া মানসম্মত হেলমেট ও ছিটবেল্ট উপরে গুরুত্বরোপ করেন তিনি । তিনি আরোও বলেন, চালককে লাইসেন্স দেওয়ার আগে ভাল করে পরীক্ষা নিতে হবে। অদক্ষ ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক কাউকে লাইসেন্স দেওয়া যাবে না । আইনের পাশাপাশি প্রত্যেককে সচেতন হতে হবে।

নাদিরা ইসলাম জলি এমপি বলেন,বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা হওয়ার অন্যতম কারণ আমরা আইন মেনে চলি না । যত্রতত্র ও অমনযোগী ভাবে রাস্তা পারাপার হওয়ার কারণে প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। বর্তমান সরকার দেশের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। যার মধ্যে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ উল্লেখযোগ্য। তবে আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে ,যার যার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। যদি আইন সঠিক ভাবে মেনে চলি, তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব ।

ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে আমাদের স্বল্প মেয়াদী ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা প্রণয়ন ও ধাপে ধাপে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

গ্লোবাল রোড সেইফটি এডভোকেসি ও গ্রান্ট প্রোগ্রাম ম্যানেজার তাইফুর রহমান বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আইন প্রয়োগের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশেও কঠোর আইন আছে । যেটার কিছু সংশোধন ও তার যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস করা সম্ভব।

উল্লেখ্য সরকার বর্তমান সড়ক আইনটি পুনরায় সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে এবং ঢাকা আহছানিয়া মিশন আইনের উল্লেখযোগ্য ধারাগুলো সংশোধনের জন্য সুপারিশ সমূহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে দাখিল করেছে।