
চাকরি প্রদানের অজুহাতে প্রতিবছরের ন্যায় এবারেও ‘ব্যাটল অব মাইন্ড ২০১৯’ এর কার্যক্রম শুরু করেছে মৃত্যুবিপণনকারী বহুজাতিক তামাক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি)। জুলাই মাসের শুরুতে দেশের বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে এক্সসীড ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর নামে প্রতিনিধি নিয়োগ প্রদান করে থাকে। নিয়োগ প্রাপ্ত অ্যাম্বাসেডর বিভিন্ন ধরনের ক্যারিয়ার ক্লাবের মাধ্যমে এই পর্যন্ত বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ব্যাটল অব মাইন্ড ২০১৯’ এর রোডশো শুরু করেছে এবং নিবন্ধন করছে। এবারের স্লোগান “চেইঞ্জ দ্যা গেম” এবং আগামী ২ সেপ্টেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রোডশো আয়োজন করতে যাচ্ছে। এবং আগামী কয়েক মাস জুড়ে নানা আয়োজন ও প্রচারণার মাধ্যমে এই প্রতিযোগীতা চলতে থাকবে। বিএটিবি ২০০৪ সাল থেকে মূলত ব্র্যান্ড প্রমোশন , তরুণ প্রজন্মকে ধূমপানে আকৃষ্ট করা এবং নীতিপ্রণেতাদের প্রভাবিত করতেই এই মৃত্যুবিপণন প্রতিযোগীতার আয়োজন করে আসছে। কর্মসংস্থান প্রদানের নামে কোম্পানিটি প্রতিবছর এই প্রতিযোগিতা আয়োজনে বিপুল অর্থ ব্যয় করে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিগত ১৬ বছরে চাকুরি প্রদানের অজুহাতে ৩০ হাজারের অধিক তরুণকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করানো হলেও চাকরি পেয়েছে মাত্র ১০০ জন বা এর সামান্য কিছু বেশি।
ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (সংশোধিত ২০১৩) এর ৫(গ) ধারায় কোন ধরনের প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানের ব্যয়ভার বহন ও পুরস্কার প্রদান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ধরনের কোন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের ব্যয়ভার বহন ও পুরস্কার প্রদান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি আইনের এই ধারা লংঘন করলে অনধিক এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা অনুর্ধ্ব তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে বিধান আছে। বিএটিবির এধরনের কার্যক্রম ২০৪০ সালের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারের অন্তরায়। তরুণ প্রজন্মকে রক্ষায় বহুজাতিক তামাক কোম্পানির বিতর্কিত প্রতিযোগিতা ‘ব্যাটল অব মাইন্ড ২০১৯’ অবিলম্বে বন্ধ করতে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল বরাবর চিঠি প্রদান করে। আগামী ২ সেপ্টেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ব্যাটল অব মাইন্ড ২০১৯’ রোডশোর আয়োজন বন্ধ করতে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য বরাবর চিঠি প্রদান করে।