
দেশের দরিদ্র ও সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করার মত যথেষ্ট আর্থিক সমর্থ নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, স্বাস্থ্য ব্যয় মেটাতে গিয়ে বাংলাদেশে প্রতিবছর সাড়ে ৫২ লাখ মানুষ দরিদ্র হয়ে পড়ছে। অন্যদিকে পারিবারিক ব্যয়ের ১০ শতাংশের বেশি স্বাস্থ্য ব্যয়ই হচ্ছে আকস্মিক স্বাস্থ্য ব্যয়। যার কারনে বাংলাদেশের ১৪ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ প্রতিবছর যথাপুযোক্ত স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছেনা। এছাড়া জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)-র প্রতিবেদনে দেখা যায় স্বাধীনতার পর দেশের প্রধান খাদ্যশস্যের উৎপাদন বেড়েছে তিন থেকে পাঁচ গুণ তার পরেও গত বছর দেশে অপুষ্টিতে ভোগা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে চার লাখ। এখনো দেশের অর্ধেক গর্ভবতী নারী রক্তশূন্যতায় ভোগেন।
বর্তমানে দেশে শহর-গ্রাম যেখানেই হোক, দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষ স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। তাই পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় দরকার দেশের সর্বস্তরের মানুষের সহায়তা। সার্বিক বিবেচনায় সরকারের পাশাপশি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন দেশের সুবিধা বঞ্চিত মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় কাজ করে যাচ্ছে।এক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সমর্থবান ব্যক্তি দেশের স্বাস্থ্য সেবা মূলক কাজকে আরো সম্প্রসারিত ও টেকসই করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।
তাই সার্বিক বিবেচনায় সুবিধা বঞ্চিত মানুষের সার্বজনীন স্বাস্থ্য সহায়তার জন্য ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টরের আওতায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে “আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফোরাম”। এই ফোরামের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের স্বাস্থ্য সেবায় স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া এবং টেকসই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষ স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভুমিকা রাখা। আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফোরামের শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে গতকাল ১৭ নভেম্বর , রবিবার, বেলা ৩:০০ টায়, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের মিলনায়তন (বাড়ি নং-১৯, সড়ক নং-১২, ধানমন্ডি, ঢাকা) এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সম্মানিত সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী, এমপি এবং বিশেষ অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: মোমিনুর রহমান মামুন এবং লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনালে সেকেন্ড সেঞ্চুরী অ্যাম্বাসেডর লায়ন অধ্যাপক ডা: এম ফখরুল ইসলাম, পিএমজেএফ । এছাড়া প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক জেলা গর্ভনর, লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল ( জেলা ৩১৫ এ২) লায়ন শেখ আনিসুর রহমান. পিএমজেএফ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সভাপতি কাজী রফিকুল আলম ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সাবের হোসেন চৌধুরী, এমপি বলেন সুবিধা বঞ্চিত মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিদেশী আর্থিক নির্ভরতা কমিয়ে স্থানীয়ভাবে তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। দেশের মানুষের সেবাকে এগিয়ে নিতে ও টেকসই করতে এই ফোরাম উলেøখযোগ্য ভুমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।
উল্লেখ্য যে, গতকাল একাশি জন জীবন ও নিয়মিত সদস্য নিয়ে আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফোরাম যাত্রা শুরু করে। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নিয়মিত বা এককালিন আর্থিক অনুদান দিয়ে এই ফোরামের নিয়মিত সদস্য, জীবন সদস্য অথবা পেট্রোন হতে পারবে। এই ফোরামের কার্যক্রম ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার জন্য এগার সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি থাকবে।