এসডিজি অর্জনে হসপিটালিটি সেক্টরে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ কৌশলপত্র বাস্তবায়ন জরুরী

এসডিজি অর্জনে হসপিটালিটি সেক্টরে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার 
নিয়ন্ত্রণ কৌশলপত্র বাস্তবায়ন জরুরী

আজ ০২ সেপ্টেম্বর, সোমবার, ১০.৩০ মিনিটে হোটেল অবকাশ এর কনফারেন্স হলে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন “হসপিটালিটি সেক্টরে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ কৌশলপত্র” বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন সভার আয়োজন করে। ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন ও ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস্ এর সহযোগিতায় ওরিয়েন্টেশন সভার আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ আতিকুল হক। তিনি বলেন, এসডিজি অর্জনে হসপিটালিটি সেক্টরে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ কৌশলপত্র বাস্তবায়ন জরুরী। পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ছয়টি সংস্থা কৌশলপত্রটি বাস্তবায়নে কাজ করবে। কৌশলপত্রটি বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয়ের তামাক নিয়ন্ত্রণ ফোকাল পয়েন্টের অধিন একটি মনিটরিং টিম গঠন করা হবে এবং প্রতিনিয়ত মনিটরিং করা হবে। বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের মহাব্যবস্থাপক ও ব্যবস্থাপকদের মাসিক সমন্বয় সভায় কৌশলপত্র বাস্তবায়নের অগ্রগতি বিষয়টি অন্তর্ভূক্তকরণের উপর গুরুত্ব দেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন এর চেয়ারম্যান রাম চন্দ্র দাস। তিনি বলেন, আবাসিক হোটেলগুলোর মধ্যে ধূমপান করা যাবে এমন কক্ষগুলোর ভাড়া ধূমপানমুক্ত কক্ষগুলো থেকে বেশি ধার্য করা হবে। প্রশিক্ষন কারিকুলামে কৌশলপত্রটি অন্তর্ভূক্ত করা হবে এবং এর উপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। যাতে করে ধূমপায়ীরা ধূমপানে নিরুৎসাহিত হয়। এছাড়া তিনি পর্যটন করপোরেশনের সকল ইউনিট প্রধানদেরকে তাদের স্ব স্ব ক্ষেত্রে ধূমপানমুক্ত বিষয়টি প্রচার করার জন্য নির্দেশ দেন। সংসদ ও সচিবালয়ের ক্যাফেটেরিয়াকে ধূমপানমুক্ত রাখার জন্য চিফ হুইপের অনুমতিক্রমে ও তাঁর সৌজন্যে প্রত্যেক টেবিলে ধূমপানমুক্ত স্টিকার রাখার বিষয়েও তিনি বলেন। এছাড়াও মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণকারীদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের বানিজ্যিক সম্মেলনে কৌশলপত্র নিয়ে একটি সেশন রাখার প্রস্তাবনা উঠে আসে।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী মো: খাইরুল আলম সেখ। আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) ড. মো: আলী আকবর, পরিচালক (পরিকল্পনা ও বাণিজ্যিক) আবেদা আকতার, সাভার সিটি করপোরেশনের নিবার্হী কর্মকতা শরফ উদ্দিন আহমেদ ও ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস্ এর গ্রান্ডস ম্যানেজার আব্দুস সালাম মিঞাঁ।
হসপিটালিটি সেক্টরে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ কৌশলপত্রটি পাওয়ার পয়েন্টে উপস্থাপন করেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সহকারী পরিচালক ও তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের সমন্বয়কারী মো: মোখলেছুর রহমান। সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পযর্টন করপোরেশনের পরিচালকবৃন্দ ও মহাব্যবস্থাপকগণ, ভাইটাল স্ট্রাটিজিসের কান্ট্রি ম্যানেজার নাসিরুদ্দিন।
সারাবিশ্বে সমন্বিতভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণ ও তামাকের ব্যবহার কমিয়ে আনার লক্ষ্যে ২০০৩ সালে Framework convention on Tobacco control(FCTC) চুক্তি অনুমোদিত হয়। বাংলাদেশ এই চুক্তির প্রথম স্বাক্ষরকারী দেশ এবং এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ২০০৫ সালে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন প্রণয়ন করে ও পরে ২০১৩ সালে আইনটি সংশোধন করা হয়। বিদ্যমান আইনে সকল পাবলিক প্লেসে ধূমপান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন গবেষনায় দেখা গিয়েছে যে, অন্যান্য পাবলিক প্লেসের তুলনায় হসপিটালিটি সেক্টরে (যেমন- হোটেল, মোটেল, গেষ্টহাউজ, রিসোর্ট, রেস্টুরেন্ট, বার ইত্যাদি) প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ধূমপানের হার বেশি। Global Adult Tobacco Survey(GATS) 2017 অনুসারে শুধুমাত্র রেস্টুরেন্টে প্রায় ৫০%, কর্মক্ষেত্রে ৪৩% মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে। হসপিটালিটি সেক্টরের আওয়াতাধীন সেবা প্রতিষ্ঠানে তামাক ব্যবহার না করেও যারা স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত ক্ষতির শিকার হচ্ছেন তাদের সুরক্ষার নিমিত্তে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় হসপিটালিটি সেক্টরে তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে কৌশলপত্র তৈরী করে ও বাস্তবায়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছে।
ফটো ক্যাপশন: তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ কৌশলপত্র বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন সভায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ আতিকুল হক বক্তব্য প্রদান করছেন।